বরগুনার বেতাগী উপজেলার চান্দখালীতে মাহমুদুল হাসান নামে এক যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবি তুলে ছেলের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন জামালপুরের মৌ নামে এক তরুণী। মাহমুদুলের বাবার করা মামলায় অবশেষে তার জায়গা হলো বরগুনার কারাগারে।
জানা যায়, মৌ নামে এই তরুণী বসবাস করতেন ঢাকার উত্তরায়। গত ২৯ এপ্রিল বরগুনার চান্দখালীর এক ভাড়া বাসায় থাকা মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে এসে অবস্থান করেন মৌ।
এ খবর পেয়ে ২৯ এপ্রিল দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় মাহমুদুলের পরিবার। মৌ এসে দরজার সামনেই অবস্থান করেন। এ ছাড়া তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার প্রেমিক (মাহমুদুল হাসান) এসে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছিলেন।
দুদিন পার হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে অবস্থান করেন ওই তরুণী। পরে ছেলের মামা ঘটনাস্থলে এলে তাকেও আটকে রাখা হয়।
এদিকে একপর্যায়ে বেরিয়ে আসে মৌয়ের আসল নাম শিখা। তার বাড়ি জামালপুরে। তিনি ঢাকা অবস্থান করে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। বিয়েও হয়েছিল একজনের সঙ্গে। সেখানে একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে।
কথিত মৌ নামের মেয়েটি এ রকম অনেকের সঙ্গে মিথ্যা পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তার নেশা। তারই ধারাবাহিকতায় মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে মিথ্যা পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এ নারী। বিভিন্নভাবে ছবি তুলে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টাও করেন তিনি।
অতঃপর বিষয়টি নজরে আসে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সাইমুল ইসলাম রাব্বির। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি আদালতের নজরে এনে আবেদন করেছিলাম। সেখানকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব আলম আমার করা অভিযোগটি আমলে নিয়ে বেতাগী থানার ওসিকে আইনি পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। জাস্টিস অব দ্য পিস এই আইনে আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
এর পর গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন আরও একটি মামলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বেতাগী) আদালতের বিচারক মো. নাহিদ হোসেনের আদালতে করেন ভুক্তভোগী পরিবার। বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এজাহারের আদেশ দেন বেতাগী থানার ওসিকে।
এ বিষয়ে বেতাগী থানার ওসি শাহ আলম হাওলাদার জানান, জামালপুর থেকে আসা তরুণীর বিরুদ্ধে ছেলে মাহমুদুলের বাবা মোশারফ হোসেন খান আদালতে একটি ভাঙচুর, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, অনুপ্রবেশকারী ও হত্যা চেষ্টার একটি মামলা করেন। আদালত সেই মামলাটি আমলে নিয়ে আমাকে আইনি ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। তারই আলোকে শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।